ছবি : বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে টেন্ডারবিহীন লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি এবং নদী ও জলাশয়ে অবৈধ জালের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো অভিযান পরিচালনা না করা, এমনকি একই খালের ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে মাছের পোনা অবমুক্ত না করে প্রকল্পের কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এতে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।
ইলিশের প্রজনন, বেড়ে ওঠা ও উৎপাদন বাড়াতে নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতিটি জেলে পরিবারকে প্রণোদনা হিসেবে মৎস্য বিভাগ চাল বিতরণ করা হয়। সেই চাল বিতরণেও তিনি স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেন। এছাড়াও দেশীয় প্রজাতির মাছ, শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশীয় মাছের প্রজনন রক্ষার্থে ও জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বকনা বাছুর বিতরণ করে মৎস্য অধিদপ্তর।উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম চলে বছরের এপ্রিল মাসে এ উপজেলায় যোগদান করেন করেই ঈদুল আযহার সরকারি বন্ধের সময় গোপনে ৪০ জন জেলেকে বরিশালের কাশীপুরে নিয়ে ওজনে কম এবং রুগ্ন বাছুর বিতরণ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায় বিতরনকৃত ওই বাছুরগুলোর প্রতিটির দাম ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং ওজন ৩৬ থেকে ৩৮ কেজি হবে। অথচ সরকারি প্রকল্পে প্রতিটি বকনা বাছুরের ওজন ৮০ কেজি এবং মূল্য ৪০ হাজার টাকা উল্লেখ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে মৎস্য কর্মকর্তার অবহেলার ফলে বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির শৌল, গজার, টাকি, শিং, কৈসহ নানান প্রজাতির মাছ। তার উদাশীনার কারনেই একটি অসাধুচক্র নদী ও জলাশয়ে নির্বিঘ্নে কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারী জাল, বিসেল জাল, গড়াকাটা চরগোড় এবং নিষিদ্ধ ঘূর্ণিজাল দিয়ে এবং নদী ও জলাশয়ে বিষ ব্যবহার করে ব্যাপক হারে মাছ শিকার করছে। এ অবৈধ কর্মকান্ডে মাছের প্রজনন ব্যাহত এবং প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
একই খালের ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে মাছের পোনা অপমুক্ত না করে হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রকল্পের টাকা, মৎস্য অভয় আশ্রম নামমাত্র থাকলেও নেই তেমন কোন কার্যক্রম। এতে প্রকৃত মৎস্যজীবী ও ক্ষুদ্র খামারিরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন এবং প্রকল্পের ফলপ্রসূতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, যা কিছু হয়েছে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার নির্দেশে হয়েছে। দুর্নীতি বিষয় জানাতে চাইলে তিনি কোন কথা না বলে নিশ্চুপ থাকেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তের পথে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ রয়েছে যেমন চায়না দুয়ারী জাল, কারেন্ট জাল, এমনকি বিষ প্রয়োগ করেও জেলেরা মাছ ধরছেন। এই অবৈধ জালগুলো বন্ধে আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। মৎস্য কর্মকর্তার দুর্নীতি থাকলে সেগুলো তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের তিন লক্ষ টাকার মধ্যে যে প্রকল্পগুলো রয়েছে, সেগুলো উপজেলা মৎস্য অফিস থেকেই বরাদ্দ হয়। তবে তিন লক্ষ টাকার উপরে যে প্রকল্পগুলো রয়েছে, সেগুলো স্থানীয় টেন্ডারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার কথা।
স্থানীয়রা উপজেলা মৎস্য মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা রুখতে তদন্তপূর্বক অবিলম্বে তাকে নিজ উপজেলা থেকে অন্যত্র বদলির দাবী জানিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
সাফাত আল মামুন
প্রকাশক
ইব্রাহিম খলিল
নিউজ
Email: news@prokash.live
বিজ্ঞাপণ
Email: ads@prokash.live
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || প্রকাশ